অস্টেলিয়া ০৩:০০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৩ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজ :
বাংলাদেশি কর্মী নিতে আগ্রহী আলবেনিয়া বিশ্ববাঙালী সংসদ বাংলাদেশের নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে হাতপাখা মার্কার গণসংযোগ সাগর তলের বিস্ময় কক্সবাজারের রেডিয়েন্ট ফিস ওয়ার্ল্ড কলম্বাস ওহাইওতে ভ্রাম্যমাণ দূতাবাস সেবা সন্তুষ্ট প্রবাসী বাংলাদেশীরা সানোয়ার খান “ন্যাশনাল ইনফ্লুয়েন্স অ্যাওয়ার্ড-২০২৫” এ ভূষিত উপজেলা নির্বাহীর স্বাক্ষর জাল: কারাগারে বরগুনার গ্রন্থাগারিক হারুন কলম্বাস ওহাইওতে ভ্রাম্যমান দূতাবাস সেবা  ক্যালিফোর্নিয়া বিএনপির উদ্যোগে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত সৈয়দপুরে পোল্ট্রি গবেষণা আঞ্চলিক কেন্দ্র উদ্বোধন ও কর্মশালা অনুষ্ঠিত

অন্যায্য বাণিজ্য ভারসাম্য থেকে রেহাই পাবেন না কেউই

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৪:২৯:১৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫
  • ৪৩০ Time View

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, অন্যায্য বাণিজ্য ভারসাম্য থেকে কেউই রেহাই পাবেন না। একই সঙ্গে তিনি যেসব দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যে ভারসাম্যহীনতা রয়েছে, সেসব দেশের ওপর আরও শুল্ক আরোপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

এর আগে, শুক্রবার হোয়াইট হাউস চীন থেকে স্মার্ট ফোন ও কম্পিউটার আমদানির ওপর শুল্ক প্রত্যাহার করে নেয়। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া পোস্টে এটিকে সাময়িক এবং নতুন করে শুল্ক আরোপের পদক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

এদিকে, চীনা কর্মকর্তারা শুল্ক সম্পূর্ণ বাতিলের জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। তারা ‘ভুল সংশোধনে বড় পদক্ষেপ’ নেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ করেছেন। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার বড় ‘উৎপাদক দেশ’ ভিয়েতনাম সফরে গেছেন এবং আরও আঞ্চলিক সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।

ভিয়েতনামের স্থানীয় একটি পত্রিকায় লেখা নিবন্ধে শি জিনপিং চীন ও ভিয়েতনামকে বন্ধুভাবাপন্ন সমাজতান্ত্রিক প্রতিবেশী হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন; যারা একই আদর্শ ও কৌশলগত স্বার্থের অংশীদার। তিনি তার আগের মন্তব্যের পুনরাবৃত্তি করে বলেছেন, বাণিজ্য যুদ্ধ ও শুল্ক যুদ্ধ কাউকে জয়ী করবে না এবং সুরক্ষাবাদ দিয়ে কোথাও পৌঁছানো যাবে না। তবে যুক্তরাষ্ট্রের নাম উল্লেখ করেননি তিনি।

প্রযুক্তি শুল্ক প্রত্যাহারের পর চীনা বাজার

প্রযুক্তি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক প্রত্যাহারের পর চীন ও হংকংয়ে শেয়ারের দাম বেড়েছে। এর বাইরে এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অন্য জায়গা বিশেষ করে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও অস্ট্রেলিয়াতেও সোমবার সকাল নাগাদ আর্থিক বাজারগুলোতে দাম বৃদ্ধি হতে দেখা গেছে।

চীনা প্রেসিডেন্ট যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের পর দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় বাণিজ্য অংশীদারদের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের চেষ্টা করছেন। পাশাপাশি বৈশ্বিক বাণিজ্যে চীনা সস্তা পণ্য সয়লাব হওয়ার আশঙ্কায় যে উদ্বেগ রয়েছে, তা নিয়েও আঞ্চলিক নেতাদের আশ্বস্ত করবেন তিনি।

• সিঙ্গাপুরে বাণিজ্য যুদ্ধের প্রভাব

চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য যুদ্ধের প্রভাব সামাল দিতে সিঙ্গাপুরের কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুদ্রা নীতি আবারও কিছুটা সহজীকরণ করেছে। দেশটির আর্থিক কর্তৃপক্ষ বলেছে, রপ্তানি নির্ভর দেশের ওপর শুল্ক প্রয়োগ হচ্ছে; তারা তাদের পণ্যের দাম কমানোর জন্য চাপের মুখে পড়বে।

বাণিজ্য যুদ্ধ সিঙ্গাপুরের অর্থনীতির জন্য স্পর্শকাতর বিষয়। কারণ দেশটি নৌপরিবহনের বড় কেন্দ্র এবং এর অবস্থান চীন ও পশ্চিমের মধ্যে। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে সিঙ্গাপুরের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩ দশমিক ৮ শতাংশ; যা তার আগের তিন মাসে ছিল ৫ শতাংশের মতো।

• ট্রাম্প লক্ষ্য অর্জন করেছেন?

ট্রাম্প এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ তুলে বিভিন্ন দেশের সমালোচনা করেছেন। হোয়াইট হাউস এখন বলেছে, বিশ্ব নেতারা আলোচনার জন্য ইতোমধ্যেই একমত হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ শুল্ক আরোপের আগে দেশটির অনেক বাণিজ্য অংশীদার সমঝোতায় পৌঁছানোর জন্য ৯০ দিনের সময় পেয়েছে।

শুল্ক আরোপের পদক্ষেপের কারণে ব্যবসায়ীদের জন্য অনুমান করা কঠিন হয়েছে যে, শুল্ক চূড়ান্তভাবে কোন পর্যায়ে পৌঁছায় এবং কোন ধরনের শিল্প বড় সুরক্ষা পায়। ব্যবসায়ীরা বড় কোনও অঙ্গীকারের আগে এখন অপেক্ষা করবেন কীভাবে বিষয়টি নিয়ে সমঝোতা হয় সেটি দেখতে।

ট্রাম্প বলেছেন, তার বাণিজ্য নীতি ক্রেতাদের কম মূল্যে পণ্য পেতে সহায়তা করবে। যদিও এ দাম আরও অনেক বেড়ে যেতে পারে বলে অর্থনীতিবিদদের অনেকে মনে করেন।

ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ৯ এপ্রিল থেকে চীনা পণ্য আমদানির ওপর ১০০ শতাংশরও বেশি শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। এর জবাবে সব ধরনের মার্কিন পণ্যে ৮৪ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে চীনের অর্থ মন্ত্রণালয়।

এই দুই অর্থনৈতিক শক্তির মধ্যে গত বছর সব মিলিয়ে প্রায় ৫৮ হাজার ৫০০ কোটি ডলার মূল্যের পণ্য বাণিজ্য হয়েছে। চীন যুক্তরাষ্ট্র থেকে যে পরিমাণ পণ্য আমদানি করেছে তার তুলনায় চীন থেকে অনেক বেশি পরিমাণে পণ্য আমদানি করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

হিসাব অনুযায়ী, গত বছর চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি হয়েছে ৪৪ হাজার কোটি ডলার মূল্যের বাণিজ্য পণ্য। আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে চীন আমদানি করেছে ১৪ হাজার ৫০০ কোটি ডলার) মূল্যের পণ্য। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরে বিশ্ব অর্থনীতির প্রায় ৪৩ শতাংশই দখল করে রয়েছে দুই দেশ—মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। বিবিসি বাংলা।

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

বাংলাদেশি কর্মী নিতে আগ্রহী আলবেনিয়া

অন্যায্য বাণিজ্য ভারসাম্য থেকে রেহাই পাবেন না কেউই

Update Time : ০৪:২৯:১৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, অন্যায্য বাণিজ্য ভারসাম্য থেকে কেউই রেহাই পাবেন না। একই সঙ্গে তিনি যেসব দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যে ভারসাম্যহীনতা রয়েছে, সেসব দেশের ওপর আরও শুল্ক আরোপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

এর আগে, শুক্রবার হোয়াইট হাউস চীন থেকে স্মার্ট ফোন ও কম্পিউটার আমদানির ওপর শুল্ক প্রত্যাহার করে নেয়। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া পোস্টে এটিকে সাময়িক এবং নতুন করে শুল্ক আরোপের পদক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

এদিকে, চীনা কর্মকর্তারা শুল্ক সম্পূর্ণ বাতিলের জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। তারা ‘ভুল সংশোধনে বড় পদক্ষেপ’ নেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ করেছেন। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার বড় ‘উৎপাদক দেশ’ ভিয়েতনাম সফরে গেছেন এবং আরও আঞ্চলিক সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।

ভিয়েতনামের স্থানীয় একটি পত্রিকায় লেখা নিবন্ধে শি জিনপিং চীন ও ভিয়েতনামকে বন্ধুভাবাপন্ন সমাজতান্ত্রিক প্রতিবেশী হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন; যারা একই আদর্শ ও কৌশলগত স্বার্থের অংশীদার। তিনি তার আগের মন্তব্যের পুনরাবৃত্তি করে বলেছেন, বাণিজ্য যুদ্ধ ও শুল্ক যুদ্ধ কাউকে জয়ী করবে না এবং সুরক্ষাবাদ দিয়ে কোথাও পৌঁছানো যাবে না। তবে যুক্তরাষ্ট্রের নাম উল্লেখ করেননি তিনি।

প্রযুক্তি শুল্ক প্রত্যাহারের পর চীনা বাজার

প্রযুক্তি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক প্রত্যাহারের পর চীন ও হংকংয়ে শেয়ারের দাম বেড়েছে। এর বাইরে এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অন্য জায়গা বিশেষ করে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও অস্ট্রেলিয়াতেও সোমবার সকাল নাগাদ আর্থিক বাজারগুলোতে দাম বৃদ্ধি হতে দেখা গেছে।

চীনা প্রেসিডেন্ট যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের পর দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় বাণিজ্য অংশীদারদের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের চেষ্টা করছেন। পাশাপাশি বৈশ্বিক বাণিজ্যে চীনা সস্তা পণ্য সয়লাব হওয়ার আশঙ্কায় যে উদ্বেগ রয়েছে, তা নিয়েও আঞ্চলিক নেতাদের আশ্বস্ত করবেন তিনি।

• সিঙ্গাপুরে বাণিজ্য যুদ্ধের প্রভাব

চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য যুদ্ধের প্রভাব সামাল দিতে সিঙ্গাপুরের কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুদ্রা নীতি আবারও কিছুটা সহজীকরণ করেছে। দেশটির আর্থিক কর্তৃপক্ষ বলেছে, রপ্তানি নির্ভর দেশের ওপর শুল্ক প্রয়োগ হচ্ছে; তারা তাদের পণ্যের দাম কমানোর জন্য চাপের মুখে পড়বে।

বাণিজ্য যুদ্ধ সিঙ্গাপুরের অর্থনীতির জন্য স্পর্শকাতর বিষয়। কারণ দেশটি নৌপরিবহনের বড় কেন্দ্র এবং এর অবস্থান চীন ও পশ্চিমের মধ্যে। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে সিঙ্গাপুরের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩ দশমিক ৮ শতাংশ; যা তার আগের তিন মাসে ছিল ৫ শতাংশের মতো।

• ট্রাম্প লক্ষ্য অর্জন করেছেন?

ট্রাম্প এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ তুলে বিভিন্ন দেশের সমালোচনা করেছেন। হোয়াইট হাউস এখন বলেছে, বিশ্ব নেতারা আলোচনার জন্য ইতোমধ্যেই একমত হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ শুল্ক আরোপের আগে দেশটির অনেক বাণিজ্য অংশীদার সমঝোতায় পৌঁছানোর জন্য ৯০ দিনের সময় পেয়েছে।

শুল্ক আরোপের পদক্ষেপের কারণে ব্যবসায়ীদের জন্য অনুমান করা কঠিন হয়েছে যে, শুল্ক চূড়ান্তভাবে কোন পর্যায়ে পৌঁছায় এবং কোন ধরনের শিল্প বড় সুরক্ষা পায়। ব্যবসায়ীরা বড় কোনও অঙ্গীকারের আগে এখন অপেক্ষা করবেন কীভাবে বিষয়টি নিয়ে সমঝোতা হয় সেটি দেখতে।

ট্রাম্প বলেছেন, তার বাণিজ্য নীতি ক্রেতাদের কম মূল্যে পণ্য পেতে সহায়তা করবে। যদিও এ দাম আরও অনেক বেড়ে যেতে পারে বলে অর্থনীতিবিদদের অনেকে মনে করেন।

ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ৯ এপ্রিল থেকে চীনা পণ্য আমদানির ওপর ১০০ শতাংশরও বেশি শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। এর জবাবে সব ধরনের মার্কিন পণ্যে ৮৪ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে চীনের অর্থ মন্ত্রণালয়।

এই দুই অর্থনৈতিক শক্তির মধ্যে গত বছর সব মিলিয়ে প্রায় ৫৮ হাজার ৫০০ কোটি ডলার মূল্যের পণ্য বাণিজ্য হয়েছে। চীন যুক্তরাষ্ট্র থেকে যে পরিমাণ পণ্য আমদানি করেছে তার তুলনায় চীন থেকে অনেক বেশি পরিমাণে পণ্য আমদানি করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

হিসাব অনুযায়ী, গত বছর চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি হয়েছে ৪৪ হাজার কোটি ডলার মূল্যের বাণিজ্য পণ্য। আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে চীন আমদানি করেছে ১৪ হাজার ৫০০ কোটি ডলার) মূল্যের পণ্য। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরে বিশ্ব অর্থনীতির প্রায় ৪৩ শতাংশই দখল করে রয়েছে দুই দেশ—মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। বিবিসি বাংলা।