অস্টেলিয়া ০৬:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ অগাস্ট ২০২৫, ২৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

১৫ জানুয়ারির মধ্যে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র দেয়ার আল্টিমেটাম

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৪:১৮:৫৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ১০৯ Time View

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র দেওয়ার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ সমাবেশ থেকে।

মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’র সমাবেশে এ আল্টিমেটাম দেওয়া হয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্ববায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র পাঠ করতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের আর কোনো শত্রু নাই, একমাত্র শত্রু আওয়ামী লীগ।

হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক হয়নি। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি অন্তর্বর্তী সরকার। উপদেষ্টা বলেন, সিন্ডিকেট এক হাত থেকে অন্য হাতে গেছে, তাহলে ওনি কি করেন।

সচিবালয়ে আগুন লাগার ঘটনা উল্লেখ করে বিভিন্ন সময়ে বৈষম্যবিরোধীদের বিরুদ্ধে যড়যন্ত্র হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগে আমরা দেখেছি সতীদাহ প্রথা, এখন দেখি নথিদাহ প্রথা। তিনি আরও বলেন, আপনাদের বলতে চাই রিয়ালিটি মাইনা নেন। আপনাদের আপা ফিরবে না। খুনি হাসিনার পুনর্বাসন হবে না।

পিলখানা হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। লাইট নিভিয়ে আলেম-ওলামাকে মেরে ফেলা হয়েছে। সেগুলোর বিচার নিশ্চিত করতে হবে। আওয়ামী লীগ যে গুম-খুন করেছে তার বিচার করতে হবে, বলেন তিনি।

জুলাই বিপ্লবে ছাত্র হত্যাকারীদের বিচার এবং সংস্কার কাজ শেষ করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসির উদ্দীন পাটোয়ারী বলেন, ২৪ এর চেতনাকে ধারণ করে বিশ্বে বাংলাদেশকে এক নতুন বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।

তিনি আরও বলেন, জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা যদি সরকারের প্রোক্লেমেশনে না থাকে বাংলার বাঘ-বাঘিনীরা তা মেনে নেবে না। ফ্যাসিবাদীদের বিচার সরকার না করতে পারে, তাহলে বাংলার বাঘেরা নিজেদের হাতে আইন তুলে নেবে। এ সময় জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র দেবে সরকার এমন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক।

জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, এ দেশের মানুষ এক নতুন বাংলাদেশ চায়। বাংলাদেশের মানুষ নতুন সংবিধান চায়। বাংলাদেশের মানুষ সংস্কার চায়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ যখন জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র পাঠের আয়োজনের ঘোষণা দেয় তখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে সব রাজনৈতিক সংগঠনের সমন্বয়ে ঘোষণাপত্র পাঠের ঘোষণা দেওয়া হয়। এই ঘোষণা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিজয়। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে বলতে চাই, অবিলম্বে ১৫ জানুয়ারির মধ্যে জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র পাঠ করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমেই নতুন সংবিধান হবে। আগামী নির্বাচন হবে গণপরিষদ নির্বাচন। সে নির্বাচনে নির্বাচিতরাই সংবিধান সংশোধন করবে। বাংলাদেশের মানুষের অসংখ্য চাওয়া আছে, আগামীর নির্বাচনে যারা জয়ী হবেন তাদের সেই চাওয়াগুলো পূরণ করতে হবে।

জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, গণহত্যার দ্রুত বিচার, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও পাচারকৃত টাকা দেশে ফেরত আনতে হবে।

এর আগে, মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে শহীদ মিনারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ কর্মসূচিতে যোগ দিতে শহীদ মিনারে ঢল নামে শিক্ষার্থীসহ তরুণ সমাজের। তরুণ সমাজ ছাড়াও আন্দোলনে আহত ও নিহতের পরিবারের সদস্যরা যোগ দেন।

Tag :
About Author Information

১৫ জানুয়ারির মধ্যে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র দেয়ার আল্টিমেটাম

Update Time : ০৪:১৮:৫৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র দেওয়ার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ সমাবেশ থেকে।

মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’র সমাবেশে এ আল্টিমেটাম দেওয়া হয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্ববায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র পাঠ করতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের আর কোনো শত্রু নাই, একমাত্র শত্রু আওয়ামী লীগ।

হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক হয়নি। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি অন্তর্বর্তী সরকার। উপদেষ্টা বলেন, সিন্ডিকেট এক হাত থেকে অন্য হাতে গেছে, তাহলে ওনি কি করেন।

সচিবালয়ে আগুন লাগার ঘটনা উল্লেখ করে বিভিন্ন সময়ে বৈষম্যবিরোধীদের বিরুদ্ধে যড়যন্ত্র হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগে আমরা দেখেছি সতীদাহ প্রথা, এখন দেখি নথিদাহ প্রথা। তিনি আরও বলেন, আপনাদের বলতে চাই রিয়ালিটি মাইনা নেন। আপনাদের আপা ফিরবে না। খুনি হাসিনার পুনর্বাসন হবে না।

পিলখানা হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। লাইট নিভিয়ে আলেম-ওলামাকে মেরে ফেলা হয়েছে। সেগুলোর বিচার নিশ্চিত করতে হবে। আওয়ামী লীগ যে গুম-খুন করেছে তার বিচার করতে হবে, বলেন তিনি।

জুলাই বিপ্লবে ছাত্র হত্যাকারীদের বিচার এবং সংস্কার কাজ শেষ করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসির উদ্দীন পাটোয়ারী বলেন, ২৪ এর চেতনাকে ধারণ করে বিশ্বে বাংলাদেশকে এক নতুন বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।

তিনি আরও বলেন, জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা যদি সরকারের প্রোক্লেমেশনে না থাকে বাংলার বাঘ-বাঘিনীরা তা মেনে নেবে না। ফ্যাসিবাদীদের বিচার সরকার না করতে পারে, তাহলে বাংলার বাঘেরা নিজেদের হাতে আইন তুলে নেবে। এ সময় জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র দেবে সরকার এমন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক।

জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, এ দেশের মানুষ এক নতুন বাংলাদেশ চায়। বাংলাদেশের মানুষ নতুন সংবিধান চায়। বাংলাদেশের মানুষ সংস্কার চায়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ যখন জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র পাঠের আয়োজনের ঘোষণা দেয় তখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে সব রাজনৈতিক সংগঠনের সমন্বয়ে ঘোষণাপত্র পাঠের ঘোষণা দেওয়া হয়। এই ঘোষণা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিজয়। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে বলতে চাই, অবিলম্বে ১৫ জানুয়ারির মধ্যে জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র পাঠ করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমেই নতুন সংবিধান হবে। আগামী নির্বাচন হবে গণপরিষদ নির্বাচন। সে নির্বাচনে নির্বাচিতরাই সংবিধান সংশোধন করবে। বাংলাদেশের মানুষের অসংখ্য চাওয়া আছে, আগামীর নির্বাচনে যারা জয়ী হবেন তাদের সেই চাওয়াগুলো পূরণ করতে হবে।

জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, গণহত্যার দ্রুত বিচার, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও পাচারকৃত টাকা দেশে ফেরত আনতে হবে।

এর আগে, মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে শহীদ মিনারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ কর্মসূচিতে যোগ দিতে শহীদ মিনারে ঢল নামে শিক্ষার্থীসহ তরুণ সমাজের। তরুণ সমাজ ছাড়াও আন্দোলনে আহত ও নিহতের পরিবারের সদস্যরা যোগ দেন।