অস্টেলিয়া ০৬:৪৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ অগাস্ট ২০২৫, ২৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মার্চ ফর ইউনিটি কর্মসূচিতে শহিদ মিনারে ব্যাপক জনসমাগম

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৪:২৯:৪৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ১১২ Time View

মার্চ ফর ইউনিটি, পূর্বে ঘোষিত বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি উপলক্ষে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে সারাদেশ থেকে হাজার হাজার লোকের সমাগম হয়েছে।

সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা লোকজনকে ছোট ছোট মিছিল নিয়ে স্লোগান দিতে দিতে শহিদ মিনারে জড়ো হতে শুরু করে। সমবেত ছাত্র-জনতা জুলাই-আগস্টের গণজাগরণের চেতনাকে অনন্য ভিন্ন উচ্চতায় ধরে রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

শহিদ মিনারের দিকে মিছিল নিয়ে যাওয়ার সময় ছাত্র-জনতা ১৯৭২ সালের সংবিধান বাতিলের দাবি জানায় এবং ‘দিল্লি না (বা) ঢাকা, ঢাকা, ঢাকা’ স্লোগান দেয়। তারা ভারতের আধিপত্য থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত বাংলাদেশ দাবি করে এবং পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার ফাঁসির দাবি জানায়।

পঞ্চগড় থেকে আসা সুমন আলী বাসসকে বলেন, শহিদদের আত্মত্যাগে অনুপ্রাণিত হয়ে এবং হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে তিনি এখানে এসেছেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের শহিদদের আত্মত্যাগ বৃথা যেতে দেব না। সরকারকে অবশ্যই সকল আওয়ামী অপরাধীদের দ্রুত শাস্তির আওতায় আনতে হবে।’

সুনামগঞ্জ থেকে আসা আরেক অংশগ্রহণকারী তমা দে বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনা রক্ষা করা আমাদের কর্তব্য। জুলাই আন্দোলনের সময় ছাত্র-জনতা এখানে জড়ো হয়েছিল বলে আজ আমরা এখানে এসেছি। এটাই সেই জায়গা যেখান থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কারীরা হাসিনার পদত্যাগের এক দফা দাবি ঘোষণা করেছিলেন। সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোকে জনগণের স্পন্দন এবং জনগণ কী চায় তা বুঝতে হবে।

শহিদ মিনার ও আশপাশের এলাকা ঘুরে দেখা যায়, শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে বসে আছে শহিদ ও আহতদের পরিবার। রাস্তার পাশে বাস ও মাইক্রোবাস দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। শহিদ মিনারের ঠিক সামনে মোবাইল টয়লেট স্থাপন করা হয়েছে। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানুষকে স্লোগান দিতে দেখা গেছে এবং হাতে ও মাথায় পতাকা বেঁধে এবং প্ল্যাকার্ড দেখিয়ে প্রধান সমাবেশের দিকে অগ্রসর হতে দেখা গেছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনও কঠোরভাবে পরিস্থিতি সামাল দেয়। ক্যাম্পাসের শিক্ষার পরিবেশ রক্ষায় বহিরাগত কোনো যানবাহন (জুলাই বিপ্লবের ঘোষণা কর্মসূচিতে যোগ দিতে আসাদের বহনকারী বাস ও মাইক্রোবাস) অনুমতি দেয়নি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলাপকালে তারা জানান, এই কর্মসূচির কারণে শিক্ষার পরিবেশ বা অন্য কোনো সমস্যা হবে না।

উল্লেখ্য, গত ২৯ ডিসেম্বর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কারীরা ৩১ ডিসেম্বর বিকাল ৩টায় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের স্বীকৃতি দিয়ে জুলাই ঘোষণা নামে একটি কর্মসূচি পালনের ঘোষণা করেন। জাতীয় নাগরিক কমিটি অবিলম্বে এই কর্মসূচিকে সমর্থন করে এবং তাদের পূর্ণ সমর্থন ও সহযোগিতার মাধ্যমে কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা পোষণ করে।

পরে মঙ্গলবার বেলা ১২টা ৪০ মিনিটে আয়োজকরা কর্মসূচি পরিবর্তন করে মার্চ ফর ইউনিটি কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

Tag :
About Author Information

মার্চ ফর ইউনিটি কর্মসূচিতে শহিদ মিনারে ব্যাপক জনসমাগম

Update Time : ০৪:২৯:৪৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

মার্চ ফর ইউনিটি, পূর্বে ঘোষিত বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি উপলক্ষে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে সারাদেশ থেকে হাজার হাজার লোকের সমাগম হয়েছে।

সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা লোকজনকে ছোট ছোট মিছিল নিয়ে স্লোগান দিতে দিতে শহিদ মিনারে জড়ো হতে শুরু করে। সমবেত ছাত্র-জনতা জুলাই-আগস্টের গণজাগরণের চেতনাকে অনন্য ভিন্ন উচ্চতায় ধরে রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

শহিদ মিনারের দিকে মিছিল নিয়ে যাওয়ার সময় ছাত্র-জনতা ১৯৭২ সালের সংবিধান বাতিলের দাবি জানায় এবং ‘দিল্লি না (বা) ঢাকা, ঢাকা, ঢাকা’ স্লোগান দেয়। তারা ভারতের আধিপত্য থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত বাংলাদেশ দাবি করে এবং পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার ফাঁসির দাবি জানায়।

পঞ্চগড় থেকে আসা সুমন আলী বাসসকে বলেন, শহিদদের আত্মত্যাগে অনুপ্রাণিত হয়ে এবং হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে তিনি এখানে এসেছেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের শহিদদের আত্মত্যাগ বৃথা যেতে দেব না। সরকারকে অবশ্যই সকল আওয়ামী অপরাধীদের দ্রুত শাস্তির আওতায় আনতে হবে।’

সুনামগঞ্জ থেকে আসা আরেক অংশগ্রহণকারী তমা দে বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনা রক্ষা করা আমাদের কর্তব্য। জুলাই আন্দোলনের সময় ছাত্র-জনতা এখানে জড়ো হয়েছিল বলে আজ আমরা এখানে এসেছি। এটাই সেই জায়গা যেখান থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কারীরা হাসিনার পদত্যাগের এক দফা দাবি ঘোষণা করেছিলেন। সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোকে জনগণের স্পন্দন এবং জনগণ কী চায় তা বুঝতে হবে।

শহিদ মিনার ও আশপাশের এলাকা ঘুরে দেখা যায়, শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে বসে আছে শহিদ ও আহতদের পরিবার। রাস্তার পাশে বাস ও মাইক্রোবাস দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। শহিদ মিনারের ঠিক সামনে মোবাইল টয়লেট স্থাপন করা হয়েছে। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানুষকে স্লোগান দিতে দেখা গেছে এবং হাতে ও মাথায় পতাকা বেঁধে এবং প্ল্যাকার্ড দেখিয়ে প্রধান সমাবেশের দিকে অগ্রসর হতে দেখা গেছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনও কঠোরভাবে পরিস্থিতি সামাল দেয়। ক্যাম্পাসের শিক্ষার পরিবেশ রক্ষায় বহিরাগত কোনো যানবাহন (জুলাই বিপ্লবের ঘোষণা কর্মসূচিতে যোগ দিতে আসাদের বহনকারী বাস ও মাইক্রোবাস) অনুমতি দেয়নি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলাপকালে তারা জানান, এই কর্মসূচির কারণে শিক্ষার পরিবেশ বা অন্য কোনো সমস্যা হবে না।

উল্লেখ্য, গত ২৯ ডিসেম্বর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কারীরা ৩১ ডিসেম্বর বিকাল ৩টায় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের স্বীকৃতি দিয়ে জুলাই ঘোষণা নামে একটি কর্মসূচি পালনের ঘোষণা করেন। জাতীয় নাগরিক কমিটি অবিলম্বে এই কর্মসূচিকে সমর্থন করে এবং তাদের পূর্ণ সমর্থন ও সহযোগিতার মাধ্যমে কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা পোষণ করে।

পরে মঙ্গলবার বেলা ১২টা ৪০ মিনিটে আয়োজকরা কর্মসূচি পরিবর্তন করে মার্চ ফর ইউনিটি কর্মসূচি ঘোষণা করেন।